আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনে আইসিসির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। দুবাইয়ে আইসিসির সদর দপ্তরে সংস্থাটির প্রধান আইন উপদেষ্টা জোনাথন হলের সঙ্গে পিসিবি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে এই চুক্তি করেন জাকা আশরাফ। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছর ফেব্রুয়ারীতে মাঠে গড়াবে খেলা।
তবে ভারতকে পাকিস্তানের মাটিতে খেলানোটা পাকিস্তানের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে জানাচ্ছে ভারতীয় গণমাধ্যম। গত ২০০৯ এ ক্রিকেটের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা লাহোর অ্যাটাকের পর বড় টুর্নামেন্টের আয়োজক হিসেবে ক্রিকেটের কালো তালিকায় নাম উঠেছিল পাকিস্তানের।
গত ২০০৯ এর চ্যাম্পিয়ন ট্রফি, এগারোর বিশ্বকাপের ভেন্যু থেকেও নাম কাটা যায় এই ক্রিকেট পরাশক্তির। পাকিস্তান সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে আইসিসির কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছে যেটি ছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপ। গত এশিয়া কাপে ভেন্যু নিয়ে দরকষাকষিতে ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বটা ভালোভাবেই ঠাহর করতে পেরেছে ক্রিকেট দুনিয়া।
এদিকে রাজনৈতিক বিরোধের জেরে ২০১৩ সালের পর থেকে ভারত–পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে না। এ সময় দুই দল শুধু আইসিসি টুর্নামেন্ট বা এশিয়া কাপে খেলেছে। ভারত শেষবার পাকিস্তানে খেলেছে ১৫ বছর আগে। তারপর আইসিসির টুর্নামেন্ট আর এশিয়া কাপ ছাড়া আর কখনো ঘরোয়া ভাবে দেখা হয় নি দুই দলের।এদিকে সেই সন্ত্রাসী হামলার কালিমা তো পাকিস্তানের আছেই ।
তবে, এবার ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের সুযোগ পেয়েছে পাকিস্তান। নানা শঙ্কার মাঝেই ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করতে যাচ্ছে তারাই। বৈশ্বিক টুর্নামেন্টটি আয়োজনে আইসিসির সঙ্গে চুক্তি করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। দুবাইয়ে আইসিসির সদর দপ্তরে সংস্থাটির প্রধান আইন উপদেষ্টা জোনাথন হলের সঙ্গে পিসিবি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে এই চুক্তি করেন জাকা আশরাফ।
এক বিবৃতিতে বলা হয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তার ইস্যুতে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের সাথে একটি বৈঠকও সেরেছে পিসিবি। গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে ভারত পাকিস্তানে খেলতে অস্বীকৃতি জানালে এক হাইব্রিড এশিয়া কাপের আয়োজন করে এসিসি। এই হিসেব নিকেশের বেড়াজালে আদতে পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন হবে কিনা এ নিয়ে ধোয়াশা সৃষ্টি হয়। তবে এই চুক্তির পর এখন বলাই যায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্বত্ব থাকছে পাকিস্তানের কাছেই।
এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যম জানাচ্ছে, ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে নিজেদের মাটিতে নিয়ে আসা। কারণ, ভারত সরকার তাদের জাতীয় দলকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে যেতে দেবে কি না, এ নিয়ে বড় প্রশ্ন আছে। তার প্রমাণ গত এশিয়া কাপেই দেখা গেছে। ভারতের ম্যাচ শ্রীলংকায় সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় এসিসি।
এদিকে গণমাধ্যম থেকে আরো জানা যায়, সঠিক সময়ে ভেন্যু প্রস্তুত করতে পারবে কিনা সেরকম প্রশ্ন ও উঠেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ক্রিকেট ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আগামী বছর ফেব্রুয়ারী–মার্চে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের কথা রয়েছে। তবে দুই ক্রিকেট পরাশক্তির এই স্নায়ুযুদ্ধের প্রেক্ষিতে আদতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির হিসেব নিকেশে নতুন ডালপালা মেলবে কিনা তা জানতে হয়ত আরো অপেক্ষা করতে হবে ক্রিকেট বিশ্বের।